রবিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৫, ০১:৫৯ পূর্বাহ্ন

রূপগঞ্জে আ.লীগের নেতাদের বাড়িতে হামলা-অগ্নিসংযোগ, আহত ২০

রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়নে নির্বাচনোত্তর সহিংসতায় আওয়ামী লীগের দুই নেতার বাড়িতে ব্যাপক ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করেছে হামলাকারীরা। কায়েতপাড়া ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সভাপতি মোশারফ হোসেন ও ইউনিয়ন মহিলা লীগের সভাপতি জোসনা আক্তারের বাড়িতে পূর্বপরিকল্পিতভাবে এ হামলা চালানো হয়।

মঙ্গলবার (৩০ নভেম্বর) রাত ৮টার দিকে উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়নের নাওড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কয়েকশ মানুষ রামদা, ছুরি, বল্লম, চাইনিজ কুড়াল, শর্টগান, আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্রেশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে হামলা চালায়। এ সময় দুজন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। গুলিবিদ্ধ নাওড়া গ্রামের মৃত ফজুল মিয়ার ছেলে ইউসুফ মিয়া (৪০) ও ওমেদ আলীর ছেলে রেনু মিয়াকে (৩৫) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

এছাড়া আহত সুবহান (২৮), জায়েদা খাতুন (৩০) ও নুরজাহানকে (৩২) মুমূর্ষু অবস্থায় ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত অন্যান্যদের রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

হামলাকারীদের দেওয়া আগুনে আওয়ামী লীগ নেতা মোশারফ হোসেনের পাঁচটি ঘর, চারটি মোটরসাইকেল, একটি প্রাইভেটকার ও কায়েতপাড়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড আওয়ামী যুবলীগের কার্যালয় পুড়ে যায়।

কায়েতপাড়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক মিনারা বেগম বলেন, কায়েতপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আনারস প্রতীকে পরাজিত হয়ে চেয়ারম্যান প্রার্থী মিজানুর রহমান, তার সমর্থক জসিম উদ্দিন জসু ও আলেক মিয়ার নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা এ হামলা চালানো হয়। মিজানুর রহমানের বড় ভাই রফিকুল ইসলামের নির্দেশে তারা একের পর এক হামলা চালাচ্ছে।

কায়েতপাড়া ইউনিয়ন যুবলীগের সহ-সভাপতি আমির হামজা বলেন, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মিজানুর রহমান পরাজিত হওয়ায় তার সন্ত্রাসীরা একের পর এক নৌকা প্রতীকের সমর্থিতদের ঘর বাড়িতে হামলা চালাচ্ছে। নেতাকর্মীদের কুপিয়ে ও পিটিয়ে জখম করছে। পুলিশ ও র‌্যাব নিরব ভূমিকা পালন করছে।

কায়েতপাড়া ইউনিয়নের নব-নির্বাচিত চেয়ারম্যান মো. জাহেদ আলী বলেন, নির্বাচনের পর দিন থেকেই নাওড়া এলাকার নৌকা প্রতীকের সমর্থকদের বাড়িতে একের পর এক হামলা ও লুটপাট চালানো হচ্ছে। কিন্তু পুলিশ ও র‌্যাব সন্তোষজনক ভূমিকা রাখছে না। ক্ষতিগ্রস্তদের মামলা রুজু করছে না। এতে সন্ত্রাসীরা উৎসাহিত হয়ে একের পর এক হামলা, লুটপাট আর অগ্নিসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছে। গত ২৭ নভেম্বর ৮ জন গুলিবিদ্ধের ঘটনায়ও পুলিশ এখনও মামলা নেয়নি।

রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এএফএম সায়েদ বলেন, ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশ, র‌্যাব ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

উল্লেখ্য, গত ১১ নভেম্বর কায়েতপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত চেয়ারম্যানপ্রার্থী আলহাজ্ব মো. জাহেদ আলী নৌকা প্রতীকে ৫৫৮ ভোট বেশি পেয়ে জয়লাভ করেন। আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মিজানুর রহমানের পরাজিত হন। ১২ নভেম্বর নৌকা প্রতীকের সমর্থকদের বাড়িঘরে হামলা ও ভাংচুরের ঘটনায় আওয়ামী লীগ নেত্রী লিপি আক্তার গুলিবিদ্ধ হয়ে এখনও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com